মানব পাচার মামলায় কুয়েতে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক বাংলাদেশি সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুলের দণ্ড চার বছর থেকে বাড়িয়ে সাত বছর করেছে কুয়েতের একটি আদালত। সোমবার তার কারাদণ্ড তিন বছর বাড়ানোর আদেশ দেয় দেশটির আদালত।
 
কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটরের দপ্তর সূত্র এবং দেশটির আরবি দৈনিক আল কাবাস ও আল নাহার থেকে শহিদ ইসলামের কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়ানোর খবর জানা গেছে।
 
এছাড়া পাপুলকে ২০ লাখ কুয়েতি দিনারের অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে।
এর আগে কুয়েতে শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় ঘুষ লেনদেন ও মানব পাচারের অভিযোগে এবং অন্যটি করা হয় অর্থ পাচারের অভিযোগে। এর মধ্যে ঘুষ লেনদেনের দায়ে আগেই তার চার বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়। একই মামলায় এবার মানব পাচারের দায়ে আদালত ৩ বছর কারাদণ্ড ও ২০ লাখ কুয়েতি দিনারের অর্থদণ্ড দিলেন। অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলাটি এখনো বিচারাধীন।
 
কুয়েতের আদালত সূত্রে জানা গেছে, আপিল আদালত আজ মানব পাচারের মামলায় শহিদ ইসলামের পাশাপাশি আরও তিনজনকে কারাদণ্ডাদেশ দেন। তারা হলেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরখাস্ত হওয়া সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মাজেন আল জারাহ, কুয়েতের সাবেক সাংসদ সালাহ খুরশিদ ও কুয়েতের একজন সরকারি কর্মকর্তা। তাদের সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই মামলা থেকে কুয়েতের বর্তমান সাংসদ সাদুন হামাদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
 
 
মূলত অবৈধভাবে বাংলাদেশের লোকজনকে কুয়েতে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘুষ লেনদেনের দায়ে গত জানুয়ারিতে শহিদ ইসলামের চার বছর কারাদণ্ড হয়। এ ছাড়া ৫৩ কোটি টাকা জরিমানাও করেন আদালত। এ মামলায় কুয়েতের তিন নাগরিকের পাশাপাশি সাংসদ শহিদের তিন সহকর্মী এবং সিরিয়ার এক নাগরিককে কারাদণ্ড দেন আদালত।
 
শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলার বিচার এখনো বাকি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অর্থ পাচারের দায় এড়ানো সাংসদের জন্য কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে তার সাজা আরও কয়েক বছর বাড়তে পারে।
 
মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে শহিদকে গত বছরের ৬ জুন রাতে তার কুয়েত সিটির বাসা থেকে সে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা আটক করেন।
 
এই মামলাসংশ্লিষ্ট কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটরের দপ্তর, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সূত্র ও নথিপত্র থেকে জানা যায়, শুরু থেকেই শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে মানব পাচারের পাশাপাশি মুদ্রা পাচারের অভিযোগ ছিল। এমনকি কুয়েতে শহিদ ইসলামের বাড়ির গ্যারেজে রাখা গাড়ি এবং তার প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালিয়ে চেকসহ আর্থিক লেনদেনের বেশ কিছু প্রমাণ পান দেশটির গোয়েন্দারা।